চট্টগ্রাম বন্দরে বুধবার (১৩ নভেম্বর) করাচি থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ এসে পৌঁছেছে। বিভিন্ন পণ্যের ৩০০টি কনটেইনার নিয়ে আসে জাহাজটি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো জাহাজ বাংলাদেশে পৌঁছাল। পাকিস্তানের বাংলাদেশস্থ হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ একে ‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের এক বিশাল অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় পর পুনরায় পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে যোগাযোগ স্থাপনে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রতিবেশী ভারতের কপালে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খুব কাছাকাছি হওয়ায় সরাসরি সমুদ্রপথে পাকিস্তানের উপস্থিতি ভারতের জন্য নিরাপত্তার প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
এ বিষয়ে একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জানান, বাংলাদেশের দুটি প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর- দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে পাকিস্তানের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। এতদিন এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যক্রম সিঙ্গাপুর বা কলম্বোতে স্থানান্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। বর্তমানে সরাসরি সমুদ্রপথে পাকিস্তানি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় এই বিশেষজ্ঞের মতে, এই পরিবর্তন শুধু বাণিজ্যের জন্য নয়, বরং এই রুট ব্যবহার করে চোরাচালানের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ সময় তিনি ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই পরিচালিত একটি অস্ত্র চালান ধরা পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। যা এখনও দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় অবৈধ অস্ত্র জব্দের ঘটনা। ওই সময় চীনা অস্ত্রের একটি বড় চালান ভারতের আসামের জঙ্গি সংগঠন উলফার কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিলো।
ভারত এবং বাংলাদেশ একসময়কার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে সম্পর্কের এক নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার সময় চীন ও পাকিস্তানকে বাংলাদেশি বন্দর থেকে দূরে রাখার যে কৌশল ছিল, তা নতুন সরকারের অধীনে পাল্টে গেছে। সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ
Leave a Reply