ত্বকের যত্নে বেশিরভাগ মানুষ প্রাকৃতিক সমাধান খোঁজেন। প্রাকৃতিক উপাদানের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে গোলাপ জল। ত্বকের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে গোলাপ জল। গোলাপ জল ত্বকের উপর হাইড্রেশন হিসেবে কাজ করে।
এটি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ত্বকের উপর অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে কাজ করে গোলাপ জল। নিয়মিত এই উপাদান মুখে মাখলে বলিরেখার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
চোখের তলায় কালচে ছোপ, ফোলাভাব দূর করে দেয় গোলাপ জল। নিস্তেজ ত্বকে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে গোলাপ জল।
প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে গোলাপ জল। তাই ত্বকে গোলাপ জল মাখলে জ্বালা ভাব, প্রদাহ কমে।
ত্বক অনেক বেশি সতেজ দেখায়। গোলাপ জল ত্বক থেকে মেকআপ তুলতেও কার্যকর। তুলোর বলে গোলাপ জল মিশিয়ে মাখলে ত্বক থেকে সমস্ত মেকআপ, ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়। গোলাপের পাপড়ি ছাড়িয়ে হালকা গরম জলে তা ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে ডিসটিলড ওয়াটার নিন।
তাতে মেশান ফুলের পাপড়ি। ঢাকা দিয়ে কম আঁচে ফুটিয়ে নিন। গোলাপ জল মুখে টোনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে মুখ ধুয়ে নিন। তারপর গোলাপ জল মুখে লাগিয়ে নিন।
ফেসপ্যাকে গোলাপ জল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ভালো ফল পাবেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরবে। দিনে দুইবারের বেশি গোলাপ জল ব্যবহার করা ঠিক নয়। সকালে গোসলের পর একবার আর রাত ঘুমোতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করলেই ত্বক ভালো থাকবে।
যেভাবে তৈরি করবেন –
পদ্ধতি ১ : ফ্রেশ গোলাপের পাপড়ি দিয়ে গোলাপজল তৈরি
১ কাপ ফ্রেশ গোলাপের পাপড়ি (২ টি গোলাপ, কোনভাবেই ফুলের দোকানের কেমিক্যাল দেয়া ফুল নেবেন না। এমন ফুল নিন যাতে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে এতে কোন কীটনাশক বা অন্য কেমিক্যাল ইউজ করা হয়নি। ২ কাপ ডিসটিলড পানি। কলের পানি ব্যবহার করলে গোলাপজল বেশিদিন ভালো থাকবে না। প্রথমে ফ্রেশ গোলাপের পাপড়িগুলো নিন। গোলাপ যত ফ্রশ হবে গোলাপ জলের কোয়ালিটি তত ভালো হবে। আলাদা আলাদা জাতের গোলাপ ব্যবহার করবেন না। এতে গোলাপজলের ঘ্রাণ বিগড়ে যেতে পারে। পরিষ্কার পাতিল অথবা সসপ্যানে গোলাপের পাপড়ি রেখে তার উপরে পানি ঢালুন। এবার পাত্রটির মুখ ঢেকে খুবই কম আঁচে চুলায় বসান। মনে রাখবেন কোনভাবেই যেন পানি ফোটা শুরু না করে অথবা গোলাপ সিদ্ধ না হয়ে যায়! যদি গোলাপ পাপড়ি তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে পানির রঙ নীল হয়ে যায় তবে ধরে নেবেন আপনার গোলাপজল তৈরি করা হয়নি। হালকা গরম পানিতে ১০-১৫ মিনিট গোলাপ পাপড়ি রাখুন। তারপর পাত্রটি চুলা থেকে তুলে নিন। শেষে এসে আপনার পানি হালকা গোলাপি/লাল হতে পারে। পানি থেকে পাপড়ি ছাঁকনি দিয়ে আলাদা করে নিন। এবার পানি পুরোপুরি ঠাণ্ডা করুন। ঠাণ্ডা হবার পর পানি আপনার পছন্দের পাত্রে ভরে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। দেরি করবেন না। এভাবে তৈরি গোলাপজল ১ সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন।
পদ্ধতি ২ : শুকনো পাপড়ি দিয়ে গোলাপজল তৈরি
উপকরণ –
বড় সাইজের গ্লাস জার
১/৪ কাপ (এক কাপের চার ভাগের ১ ভাগ) শুকনো গোলাপ পাপড়ি।
১.৫ কাপ (দেড় কাপ) গরম করে নেয়া বিশুদ্ধ পানি।
যা করবেন –
গ্লাস জারের মধ্যে শুকনো পাপড়ি নিন। এক্ষেত্রেও মনে রাখবেন কোন কেমিক্যাল পাপড়িতে আছে এমন সন্দেহ থাকলে সেই গোলাপ ব্যবহার করবেন না। ফুটিয়ে নেয়া গরম পানি আস্তে আস্তে জারের ভেতরে পাপড়ির উপর ঢালুন। পাত্রের মুখ ঢেকে দিন এবং ১০-১৫ মিনিট পাত্রের পানি ঠাণ্ডা হতে দিন। পানি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে অন্য একটি পাত্রে ছাঁকনির সাহায্যে গোলাপজল আলাদা করে ঢেলে নিন। সাথে সাথে ঠাণ্ডা করে নেয়া গোলাপজল ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। এটাও ১ সপ্তাহ ব্যবহার করতে পারবেন।
Leave a Reply