বাতাসে এরই মাঝে একটু একটু করে শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশ নাতিশীতোষ্ণ দেশ হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন শীতের প্রকোপ ভালোই টের পাওয়া যায়। শীতে সুস্থ থাকতে আমাদের শরীরের দরকার বাড়তি যত্নের। তেমনি ত্বকের জন্যও বাড়তি যত্ন প্রয়োজনীয়।
ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের ত্বকেও পরিবর্তন ফুটে ওঠে। শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেও শুষ্ক ত্বকের মানুষরা পড়ে যান বিপদে। শীতে তাদের জন্য ত্বকের যত্ন হয়ে দাঁড়ায় আলাদা ঝক্কি।
শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় প্রাকৃতিক আদ্রতা কমে যাওয়ায় ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়। শীতে ত্বকের শুষ্কতা এড়ানো যাবে না। তবে রুটিনে একটু পরিবর্তন এবং কিছু নিয়ম মেনে চললেই পাওয়া যাবে সুফল।
১। ময়েশ্চারাইযারের ব্যবহার
মুখ, হাত অথবা শরীরের যেকোনো অংশে সাবান ব্যবহারের পর প্রাকৃতিক তেল গুলো ধুয়ে যায়। ত্বকের আদ্রতা রক্ষায় প্রাকৃতিক তেল গুরুত্বপূর্ণ। শীতে ত্বক ধোঁয়ার পর পরই এরজন্য ময়েশ্চারাইযার ব্যবহার করা আবশ্যক। বাড়ির বাইরে বের হলেও সাথে ময়েশ্চারাইযার রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
২। প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার
শীতে সূর্যের তেজ কম থাকায় শীতে অনেকে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করার কথা ভাবতে পারেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন,শীতেও বাইরে বের হওয়ার আগে প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে সানস্ক্রিন। শীতে সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের আরও ক্ষতি হতে পারে। তাই ময়েশ্চারাইযার ব্যবহারের পর পর সানস্ক্রিন আবশ্যক।
৩। রাতে ত্বকের যত্ন
শুষ্ক ত্বকের জন্য রাতে ঘুমানোর আগে ত্বক চর্চা করলে উপকারি। ভারী ময়েশ্চারাইযার ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে তা সারারাত কাজ করতে পারে। এতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। হাত ও পায়েও রাতে বিভিন্ন অয়েন্টমেন্ট বা ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪। ত্বক চর্চার উপাদানে পরিবর্তন
শীতের শুরুতে ত্বক চর্চার ক্ষেত্রে সহজ ও সাধারণ রুটিন অনুসরণ করাই উত্তম। ত্বকের ময়েশ্চার ব্যারিয়ার সুস্থ থাকলেই অন্যান্য সিরাম, টোনার ও অন্যান্য প্রোডাক্ট কাজ করবে। সকালে শুধু ময়েশ্চারাইযার ও সানস্ক্রিন এবং রাতে কোমল ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইযারের ব্যবহারে পেতে পারেন ভালো ফল। এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য প্রোডাক্ট ব্যবহার শুরু করতে পারেন।
৫। হিউমিডিফাইয়ার ব্যবহার
শীতকালে বাতাসে আদ্রতা কম থাকায় বাতাস শুষ্ক হয়ে পড়ে। ঘরের বাতাসের আদ্রতা ঠিক রাখার জন্য হিউমিডিফাইয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ত্বকের আদ্রতা বজায় থেকে শুষ্কতা কমতে পারে।
৬। গোসলে গরম পানির ব্যবহার
শীতে গরম পানি দিয়ে গোসলে মিলে শান্তি। কিন্তু অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা এরজন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহারের পরামর্শ দেন। শীতে গোসলের পর শরীর হালকা ভাবে নরম তোয়ালে ব্যবহার করে মোছার পরামর্শও দেন বিশেষজ্ঞরা।
৭। স্ক্রাব ব্যবহারে সতর্কতা
স্ক্রাব ব্যবহারে ত্বকের মরা কোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে শীতে বার বার স্ক্রাব ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এসময় কোমল এক্সফোলিয়েন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। শুষ্ক হয়ে ত্বক ফেটে গেলে অথবা জ্বালা-পোড়ার সমস্যা হলে স্ক্রাব ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
৮। ভেতর থেকে হাইড্রেশন
বাইরে থেকে ত্বকের যত্নের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় পান করে ভেতর থেকেও শরীরকে রাখতে হবে সতেজ। ভেতর থেকে শরীর সতেজ থাকলে চেহারায় ফুটে উঠবে উজ্জ্বলতা। এসময় খাবার-দাবারেও নজর রাখতে হবে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবারে উপকার পাওয়া যাবে। এসব খাবার শরীরে নতুন কোষ বানাতে সহায়তা করবে।
৯। নরম শীতের কাপড় ব্যবহার
ত্বকের সমস্যায় নরম শীতের কাপড় ব্যবহার করতে হবে। ঢিলেঢালা, নরম শীতের পোশাকে ত্বক আরাম পাবে।
Leave a Reply