চুরির অভিযোগে মামুন নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যার জেরে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৩ জনের লাশ এসেছে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে। তার মধ্যে একটি লাশ এসেছে দীঘিনালা থেকে। এছাড়া আহত হয়ে আরো ৭ জন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আরএমও ডাক্তার রিপল বাপ্পি। নিহতরা হচ্ছে খাগড়াছড়ি সদরের জোনাল চাকমা (২৫), রুবেল ত্রিপুরা (২১) ও দীঘিনালার ধনরঞ্জন চাকমা (৩০)।
তিনি বলেন, দীঘিনালা ও সদর উপজেলা থেকে আসা ৯ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সেনবাহিনীর দীঘিনালা জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল ওমল ফারুক, জেলা প্রশাসক মো: সজিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দীঘিনালা বাজার হতাহতদের দেখতে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতলে যান। এ সময় তারা গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথে নিয়ে সমন্বিত কাজ চলছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া কোন ধরণের উস্কানী চক্রান্তে বিএনপির কর্মীদের পা না দেওয়ার ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের প্রতিরোধ করতেও নেতাকর্মীদের আহবান জানিয়েছেন। তিনি পাহাড়ি-বাঙালি সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্রামে গ্রামে প্রহড়া বসানোর আহবান জানিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসরা দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে। এ দিকে দীঘিনালা হামলার জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবস্থান নিয়েছে পাহাড়িরা। রাতে পানছড়িতে সেনাবাহিনীর গাড়ী ও ফায়ার সার্ভিসের হামলার ঘটনা ঘটে। জেলা সদরের নারায়নখাইয়া ও স্বনির্ভর বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে পাহাড়িরা। এ সময় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়।
রাতে খাগড়াছড়ি শহরের বিভিন্ন স্থানে গুলির শব্দ শোনা গেছে। এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
উল্লেখ যে, বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে এক বাঙালি যুবককে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে দীঘিনালা সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল হামলা চালানো হয়। হামলার ঘটনার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ফাঁকাগুলি ও অর্ধ শতাধিক দোকানপাটে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
Leave a Reply